আমিও আর্ট জানতাম না, কিন্তু এখন এমন এমন ব্যাকগ্রাউন্ড ডিজাইন এবং ক্যারেক্টার ডিজাইন পারি! আপনি যদি আর্ট না জানেন তবে অ্যানিমেশন করতে পারবেন, তবে জানতে হবে টেকনিক। সেটাই এই ভিডিওতে বলব।
দেখুন, যখন প্রথম অ্যানিমেশন মুভি বানানো শুরু হয়, যেগুলো আমরা আজো দেখি—ডাম্বি, জঙ্গল বুক, সিন্ডেরেলা—এসব মুভি হাতে ড্রয়িং করে করা হতো। তখন অ্যানিমেশন করতে গেলে হাতে আকার কোনো বিকল্প ছিল না। তাই আর্টিস্ট না হলে অ্যানিমেশন করতে পারতেন না।
কিন্তু এখন যুগ পাল্টেছে! এখন সফটওয়্যারের মাধ্যমে অ্যানিমেশন করা যায় খুব সহজে, যেখানে ফ্রেম বাই ফ্রেম হাতে ড্রয়িং করার প্রয়োজন নেই। যেমন রিগিং—এগুলো আমি হাতে থাকা মাউস দিয়েই আমার সিক্রেটগুলো দিয়ে সফটওয়্যারের মাধ্যমে করেছি।
যদি ব্যাকগ্রাউন্ড ডিজাইনের কথা বলি, তাহলে আপনি আমার দেখা টেকনিক প্রয়োগ করে এমন ব্যাকগ্রাউন্ড করতে পারবেন। আমার দেখানো নিয়মে ব্রাশ দিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই বানাতে পারবেন এমন গাছ। 🌳
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি আর্ট পারেন বা না পারেন, আপনি কি ভর্তি হলেই অ্যানিমেশন শিখতে পারবেন? উত্তর—না। এর দুইটি কারণ আছে।
প্রথম কারণ
আপনি আর্ট না শিখে এমন অ্যানিমেশন বানাতে পারবেন, যেগুলোর মুভমেন্ট এরকম। কিন্তু আপনি যদি চান, আপনার ক্যারেক্টার এভাবে মুভমেন্ট করবে, আপনার ব্যাকগ্রাউন্ডের এরকমভাবে অনেক অ্যাঙ্গেল থেকে শট নিতে হবে, তখন আপনার আর্ট জানা লাগবে। এছাড়া এসব অ্যানিমেশনকে বলে ফ্রেম বাই ফ্রেম অ্যানিমেশন বা ট্রেডিশনাল অ্যানিমেশন। এগুলো এখন হাতে দিয়ে খাতায় ড্রয়িং করা হয় না, তবে সফটওয়্যারে ফ্রেম বাই ফ্রেম ড্রয়িং করে বানানো হয়।
আমাদের কোর্সে এটাও দেখানো হয়েছে, তবে এই ট্রেডিশনাল অ্যানিমেশনের বেসিকটা আমরা দেখিয়েছি।
তাহলে আপনি আমাদের কোর্সে ভর্তি হলেই এরকম অ্যানিমেশন করতে পারবেন না। পারবেন এরকম অ্যানিমেশন।
তবে আপনি চাইলে আগে টুইনবেইজড অ্যানিমেশন শিখে, এরপর প্যাশন থাকলে আস্তে আস্তে আর্ট শিখে এমনটা করতে পারবেন। তার জন্য আলাদা কোর্স করা লাগবে না। যেমনটা আমাদের অনেক স্টুডেন্ট করেছে।
দ্বিতীয় কারণ
এবার আসি দ্বিতীয় যে কারণে, যার জন্য আমাদের কোর্সে ভর্তি হলেই ভালো অ্যানিমেশন শিখতে পারবেন না।
দেখুন, আমি প্রথমেই বলেছি বর্তমানে সফটওয়্যারের মাধ্যমে অ্যানিমেশন করা যায়, আমরা এটাই শেখাই। কিন্তু কথা হচ্ছে, আপনি সফটওয়্যার দিয়ে কিভাবে আমাদের মতো এরকম ভালো অ্যানিমেশন করবেন। এগুলো করতে হলে আপনার আর্ট না জানলেও জানতে হবে টেকনিক, সাথে ভালো আর্ট সেন্স থাকা লাগবে।
বিষয়টি হচ্ছে, আপনাকে আমরা শিখিয়ে দিলাম এভাবে ক্যারেক্টার ডিজাইন করে, এভাবে ব্যাকগ্রাউন্ড ডিজাইন করে। কিন্তু অনেকবার বলার পরেও আপনি যদি এটা না বুঝেন যে ক্যারেক্টারের কস্টিউম কেমন, কালার হলে ভালো লাগবে, কেমন চুল দিলে ভালো লাগবে, ব্যাকগ্রাউন্ডের ক্ষেত্রে কেমন কালার দিব, আমার ব্যাকগ্রাউন্ড দেখতে ভালো লাগছে কিনা—এই যে রুচিবোধ, এইটা যদি আপনি উন্নত না করতে পারেন, তাহলে আপনি অ্যানিমেশন শিখতে পারলেও আপনার ভিডিও কোনোদিন ভালো হবে না। তবে যেমন আর্টও শেখা যায়, তেমনি আর্টের সেন্সও চেঞ্জ করা যায়, আর এটা খুব সহজে এবং দ্রুত করা যায়।
আর্ট সেন্স উন্নত করার দুইটা টেকনিক ফলো করতে পারেন:
১. ভালো ভালো অ্যানিমেশন আর্ট দেখতে হবে।
২. ইমাজিনেশন করতে হবে। 💭
আপনি অনেক ভালো ভালো কাজ দেখবেন আর কম্পেয়ার করবেন—আচ্ছা, সে তো এমন ক্যারেক্টারে এমন কস্টিউম দিয়েছে। এটা দেখে ইমাজিনেশন করবেন, তাহলে আমি আমার ক্যারেক্টারে এমন কালার দিতে পারি।
অনেক অনেক ভিডিও দেখা পরে, যখন আপনি জানবেন, একটা জঙ্গলের ব্যাকগ্রাউন্ড এমন হাজারো গল্পে হাজারো ভাবে করেছে, তাহলে আপনি ইমাজিনেশন করবেন, আমি এভাবে করি, ভালো হবে। তখন আপনি নিজের মতো একটা করতে পারবেন।
এখন আপনি যদি না জানেন, জঙ্গলের দিনের সিন কেমন, হয় সন্ধ্যার সিন কেমন হয়, বা রাতের কেমন হয়?
তাহলে কি শুধু মাত্র বাস্তব জীবনে কোনোদিন জঙ্গল দেখেছিলেন তা ভেবে কাজ করলেই হবে? না, হবে না।
তাহলে আপনি যদি অ্যানিমেশনে ভালো করতে চান, আপনার এই আর্ট সেন্সে উন্নতি করতে হবে।
তো সব কিছু ভেবে চিনতে, যদি আপনার মনে হয় আপনি পারবেন ভালো অ্যানিমেশন করতে, তাহলেই আসবেন। তবে আবারো বলছি, ১টা কথা মনে রাখবেন: এ পি জে আব্দুল কালাম স্যার বলেছিলেন, “জন্ম থেকে সবাই মেধাবী হয় না, কিন্তু পরিশ্রম করলে সবাই মেধাবী হতে পারে।” 💪✨